
আত্মনিরিখে: সম্পাদনা প্রসঙ্গ

এর ফাঁকেই রাত জেগে প্রুফ দেখছি, প্রিন্টার্স লাইন রেডি করছি। একটা হুলুস্থূল সময়। কিন্তু পয়সা তো লাগবে সবার আগে। বিজ্ঞাপন নেবার পরামর্শ দিল অনেকে, সময় নেই। ছোটো কাগজের সাথে বিজ্ঞাপন নেবার আদর্শগত যে-দ্বন্দ্বের জায়গা তা নিয়েও ভাবার সময় নেই। অগত্যা মা-ই ভরসা। মা-কে কথা দিলাম পত্রিকা বিক্রি করে পরিশোধ করে দেব। টাকা পাবার আনন্দে মা-কে সালামও করে ফেললাম, যে-রেওয়াজ খুব একটা ছিল না ঘরে। ঠিক এইরকম ঘটনাগুলো বোধহয় সব ছোটো কাগজ সম্পাদক, তরুণ চলচ্চিত্র-নির্মাতাদের বেলাতেই প্রথম দিকে একবার ঘটে।
নারী-সম্পাদক হিসেবে আলাদা ঘটনা কিছু নিশ্চয় আছে, সেটা নিজে অনুভব করতে না-চাইলেও চারপাশের নানা অবাক দৃষ্টি বুঝিয়ে দিত একটা কিছু অস্বাভাবিকতা চলছে। সবচেয়ে বেশি অবাক হত বড়ো বড়ো ফোল্ডিং করা প্লেটগুলো হাতে যখন ছাপাখানায় ঢুকে যেতাম। একবিংশ শতকে এই বিস্ময় থাকবার কথা ছিল না। মেশিন রুমে কাজ করা ছেলে-ছোকরারা আশ্বস্ত হত আমার ঘাড়ের উপর দিয়ে কখনো মাহমুদ আলম সৈকত বা আলাউদ্দিন খোকনের মতো পুরুষ কাউকে দেখে। এরকম উপরিতলের বিস্ময়, হতবাক, হীন, কৌতুক-আমোদি দেখাগুলো নিয়ে অভ্যস্ততা ছিল। ধাক্কাটা অন্য জায়গা থেকে লাগল।


