আত্মনিরিখে: সম্পাদনা প্রসঙ্গ
তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক প্রশাসন নিয়ে পড়াশুনা করি। বাম-রাজনীতি করি। আর দৈনিক পত্রিকায় পার্টটাইম কনট্রিবিউটর। চারুকলা, শিল্প ও বিশ্বসাহিত্য নিয়ে বিপুল আগ্রহ। শুধু লোক প্রশাসন পড়তেই ভালো লাগত না। ফলত ডিপার্টমেন্টের বাইরে গিয়ে কবি-শিল্পীরাই হয়ে গেল আড্ডার বন্ধু। তখনও চিঠিযুগ অবশিষ্ট ছিল। লেখালেখি-আঁকাআঁকি কাগজ-কলমেই চলত। জাতীয় পত্রিকায় কবিতা পাঠাই সম্পাদক বরাবরে দরখাস্ত লিখে খামে ভরে। শুক্রবারে শিল্প-সাহিত্যের পাতাগুলো প্রকাশিত হত। দৈনিকের মূল পাতাগুলোকে সরিয়ে রেখে শুধু সাপ্লিমেন্টারিগুলো দুই থেকে পাঁচ টাকায় চেরাগি পাহাড় মোড়ে গণির দোকান থেকে সংগ্রহ করতাম। তারপর আড্ডায় চলত কাঁটাছেড়া-বিশ্লেষণ। অমুক কবির তমুক লাইনটা ভালো, তমুক গদ্যটা ভালো, গল্পের গাঁথুনি দুর্বল ইত্যাদি। তবে আমাদের বেশিরভাগ সময়েই মনে হয়েছে কাগজ ভরানো আর প্রতিষ্ঠিত লেখকদের জন্যই দৈনিকের পাতা বরাদ্দ থাকে। সেখানে না-আছে নতুন কোনো নিরীক্ষা, না সমাজ-বাস্তবতা। ছোটো কাগজগুলিই অতীতের মতো বর্তমানের (তখনকার) এই অন্ধকার দূর করতে পারে। ততদিনে দৈনিক পত্রিকায় সম্পাদনার কাজেও জড়িয়েছি। টুকটাক অভিজ্ঞতা হয়েছে। মনে হল নিজেই একটি কাগজ বের করে ফেলি-না কেন!
নামও ঠিক করে ফেললাম, ‘ঘুড়ি’! ও বয়সে যেমন হয়! আকাশের বিশালতা আর আদিগন্ত উড়বার স্বাধীনতাই নাম নির্বাচনে প্রলুব্ধ করেছিল নিশ্চয়। ২০০৫ থেকে ২০১১ ঘুড়ির মোট ৭টি সংখ্যা বেরিয়েছিল। ৭টি সংখ্যা আজ ২০২৩-এ এসে নেড়েচেড়ে যখন দেখি বেশ কিছু উপলব্ধিতে আক্রান্ত হই। যদিও ফিরে দেখতে ভালো লাগে না। কিন্তু কখনো পরিবর্তনমানতার প্রবাহ কোথায় কতদিকে কতভাবে ধাবিত হল তা আবিষ্কার করা গেলে বর্তমান-চিন্তাকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে সুবিধাই হয়।

ঘুড়ির প্রথম সংখ্যা যখন বেরিয়েছিল তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত। জঙ্গিবাদের উত্থান আর সিরিজ বোমা হামলা সাধারণ ও মুক্তবুদ্ধির মানুষেদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে রেখেছিল। সে-সময় শিল্প সাহিত্যে আমাদের কী ভূমিকা হতে পারে, মনে হল যার যা কাজ সেটা করাই একটা অর্থ হতে পারে হয়তো। সম্পাদকীয়তে লিখেছিলামও এরকম একটি লাইন, “ঘুড়ি এ-সময়ের সাহিত্যের ছোট কাগজ। সময়ের শৈল্পিক প্রকাশে ঘুড়ি তার স্বাধীনতায় উড়বে। সময় এবং স্বপ্ন যেহেতু কোনোটাই স্থির নয়, তাই কত দূরের আকাশ ঘুড়ি ছোঁবে— সে-ভারটি তোলা থাক নির্দোষ সময়ের কাছেই।”
এ-সমস্ত অনির্দিষ্ট স্বপ্নময় শব্দ-বাক্য এখন ঠিক এইভাবে আসে না। প্রথম সংখ্যায় বেশ কিছু গদ্য-কবিতা-গল্প সহ শিল্পী মনসুর-উল করিমের একটি সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলাম। জীবনের প্রথম সাক্ষাৎকারটি নিতে গিয়েছিলাম চারুকলার বন্ধু লুসিফার লায়লার হাত ধরে। প্রচ্ছদ করে দিয়েছিলেন চারুকলার বড়ো ভাই সুদীপ্ত। পরে চারটি সংখ্যার প্রচ্ছদই তিনি করেছিলেন। প্রথম সংখ্যায় লেখক কারা হবেন এবং কী কী বিষয় থাকবে সেটাই একটা যুদ্ধ ছিল। পরিচিত লেখক বন্ধু-বান্ধব ছাড়া দূরের লেখক যাঁদের আমি চিনলেও আমায় চেনেন না, তাঁরা কেন লেখা দেবেন এটাও দুঃশ্চিন্তার বিষয় ছিল। সমস্ত দুঃশ্চিন্তাকে জয় করে লেখা জোগাড় করতেই প্রায় আধা বছরের বেশি সময় লেগে গেল। কিন্তু লেখাগুলো পড়ে খুব বেশি অসন্তুষ্ট হতে হয়নি তখনকার মতো এটা মনে আছে। লেখা তো হল, ছাপাছাপির দুনিয়ায় কাউকেই তো চিনি না। আলাউদ্দীন খোকন এগিয়ে এলেন। চেরাগি পাহাড় মোড়ে লুসাই ভবনে বসবাস করা মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরীর সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধায়ক,সঙ্গী। মাহমুদ আলম সৈকত সূত্রে আমারও বন্ধুপ্রতিম বড়ো ভাই। রমা চৌধুরীর সমস্ত বই প্রকাশ করতেন তিনি। সে-সুবাদে প্রেসপাড়া পরিচিত ছিল। তিনি নিয়ে গেলেন আন্দরকিল্লা মোড়ে কোহিনূর প্রেসের পাশেই মিলেনিয়াম কম্পিউটারে। রণতোষ ধর কম্পোজ করতেন। ছোট্ট একটা অফিসকক্ষে পিছনে পেট বের হয়ে থাকা সারে-সারে কম্পিউটারগুলোতে সারাদিনরাত খটাখট শব্দে কম্পোজ চলত। ফেব্রুয়ারি হচ্ছে বইমেলার মাস। বই-কাগজ সব বিক্রির ভরা মৌসুম। সে-মাসের মধ্যেই বের করা না গেলে তো চলবেই না।
ঢাকা বাংলা একাডেমির বইমেলায় বহেরা তলায় ছিল লিটলম্যাগ চত্বর। ‘শালুক’ সম্পাদক ওবায়েদ আকাশকে বলে রেখেছি, “প্রকাশমাত্রই আমি কুরিয়ার করে দেব, আপনি শুধু কাগজগুলো রাখবার ব্যবস্থা করবেন”। এদিকে পৃষ্ঠাবিন্যাস হয়ে গেল, তার খরচা সাধ্যের মধ্যেই ছিল। কাগজ, প্লেট এসব কিনবার আর সামর্থ্য নেই। আবার ফেব্রুয়ারি মাস বলে ছাপাবার জন্য প্রেস ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।
এর ফাঁকেই রাত জেগে প্রুফ দেখছি, প্রিন্টার্স লাইন রেডি করছি। একটা হুলুস্থূল সময়। কিন্তু পয়সা তো লাগবে সবার আগে। বিজ্ঞাপন নেবার পরামর্শ দিল অনেকে, সময় নেই। ছোটো কাগজের সাথে বিজ্ঞাপন নেবার আদর্শগত যে-দ্বন্দ্বের জায়গা তা নিয়েও ভাবার সময় নেই। অগত্যা মা-ই ভরসা। মা-কে কথা দিলাম পত্রিকা বিক্রি করে পরিশোধ করে দেব। টাকা পাবার আনন্দে মা-কে সালামও করে ফেললাম, যে-রেওয়াজ খুব একটা ছিল না ঘরে। ঠিক এইরকম ঘটনাগুলো বোধহয় সব ছোটো কাগজ সম্পাদক, তরুণ চলচ্চিত্র-নির্মাতাদের বেলাতেই প্রথম দিকে একবার ঘটে।
নারী-সম্পাদক হিসেবে আলাদা ঘটনা কিছু নিশ্চয় আছে, সেটা নিজে অনুভব করতে না-চাইলেও চারপাশের নানা অবাক দৃষ্টি বুঝিয়ে দিত একটা কিছু অস্বাভাবিকতা চলছে। সবচেয়ে বেশি অবাক হত বড়ো বড়ো ফোল্ডিং করা প্লেটগুলো হাতে যখন ছাপাখানায় ঢুকে যেতাম। একবিংশ শতকে এই বিস্ময় থাকবার কথা ছিল না। মেশিন রুমে কাজ করা ছেলে-ছোকরারা আশ্বস্ত হত আমার ঘাড়ের উপর দিয়ে কখনো মাহমুদ আলম সৈকত বা আলাউদ্দিন খোকনের মতো পুরুষ কাউকে দেখে। এরকম উপরিতলের বিস্ময়, হতবাক, হীন, কৌতুক-আমোদি দেখাগুলো নিয়ে অভ্যস্ততা ছিল। ধাক্কাটা অন্য জায়গা থেকে লাগল।
প্রথম সংখ্যাটা বেরিয়ে যাবার পর দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলাম। বুদ্ধিজীবী মহল থেকে উঠে আসা বক্তব্য ছিল এমন, এটা কী ধরনের লিটল ম্যাগাজিন হল, এত বড়ো বড়ো ফন্ট! কয়টা গল্প-কবিতা ছাপিয়ে দিলেই সম্পাদনা হয়ে গেল! আবার অনেকেই এত প্রশংসা করতে থাকল কাগজটি হাতে নিয়েই নাকি একটা নরম-কোমল অনুভূতি হচ্ছে, অনেকদিন পর চট্টগ্রাম থেকে একটা সুন্দর কাগজ হয়েছে বলে। ইতোমধ্যে ঢাকা বইমেলা থেকেও ঘুরে এসেছি। আগ্রহভরে উলটেপালটে দেখেছে সবাই, কিনেছেও অনেকে। অবাক বিস্ময়ে শুধু লক্ষ করলাম অনেকদিন অতিবাহিত হবার পরও একজন পাঠকও পাইনি যিনি বলেছেন ‘ঘুড়ি’তে প্রকাশিত আহমাদ মোস্তফা কামালের ‘মধ্যবিত্তের পরিচয় চিহ্ন’ লেখাটি খুব চিন্তার উদ্রেক করে, প্রশান্ত মৃধার নতুন একটি গল্প পেলে কী করে, আহমেদ মুনিরের ‘প্রতিবেশী’ গল্পটি কিংবা শিল্পী মনসুর উল করিমের নেয়া অন্তরঙ্গ সাক্ষাৎকারটি নিয়ে কিছু বলেছেন! আর কিছু না-হোক, পাকা কবিদের পাশে সে-সংখ্যায় প্রথম কবিতা ছাপা হয়েছে এমন কবিতা নিয়েও বলা তো যেত! সমাজের দেখা চোখের অভ্যস্ততা এ-জায়গায় এসে ধাক্কা খেল।

সচেতন মানুষের নির্লিপ্ততা ও উপরিতলের দেখায় ভরসাহীন না-হয়ে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হলো ‘ঘুড়ি’র। ভেবে ফেললাম, লোকে পড়বে না, লোকে ভেবে মূল্যায়নের কাজ করবে না; তাই বলে থেমে থাকলেও চলবে না। লোকের জন্য নয়, সাহিত্যের সাথেই নিবিড় করে যুক্ত থাকা হবে সম্পাদনা চালিয়ে গেলে।
ভাবনা-চিন্তার পরিসরটি প্রতি সংখ্যায় পরিবর্তিত ও বড়ো হতে থাকল একটু একটু করে।
‘চর্যাপদ’ নামে শুধু কবিতা নিয়ে পকেট সাইজ কাগজ বেরুত চট্টগ্রাম থেকে। দামও অল্প হওয়ায় তুমুল জনপ্রিয় ছিল। সে-সময় ‘চর্যাপদ’-এর সম্পাদনা পর্ষদে ছিল এক ঝাঁক মেধাবী তরুণ কবি। সাইদুল ইসলাম, নায়েম লিটু, চন্দন চৌধুরী, অঞ্জন সরকার জিমি, ফুয়াদ হাসান। এবং পরে যুক্ত হল মুয়িন পারভেজ, মেরুন হরিয়াল। সম্পাদনা পর্ষদ ছাড়াও চর্যাপদ কেন্দ্রিক একটা আড্ডা তৈরি হল। আড্ডা কেন্দ্রের গুরুভাগে থাকতেন শরীফা বুলবুল লাকী। লাকী আপা ‘বলাকা’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করতেন। হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে একটি বিশেষ সংখ্যার কথা মনে আছে এখনো। ‘চর্যাপদ’-এর আড্ডা বসত কদম মোবারক মার্কেটে লাকী আপার ‘বলাকা’ অফিসে। টাটকা সব কবিতা শুনে, পড়ে ও লিখে একটা বেশ দিন যাচ্ছিল। প্রতিদিন কবিতা লেখার চেষ্টা করতাম; অন্তত আমরা তিনজন সাইদুল, মুয়িন ও আমি। না-লিখলে দেখা হওয়াটাই অনেক পানসে লাগত। কবিতা শোনার পর একে অন্যের পাঠ প্রতিক্রিয়ার জন্য উৎসুক হয়ে থাকতাম। মনে আছে প্রতিক্রিয়া কখনো বাহ, সুন্দর—এইসব বিশেষণে আটকে থাকেনি। এক বিকেলে আমরা নৌকায় চড়ে কর্ণফুলি নদীতে ঘুরতে বেরুলাম। মাঝ নদীতে সেলিম মাঝিকে বললাম, “ভাই ইঞ্জিন থামিয়ে একটু বিশ্রাম নিন না!” উদ্দেশ্য নীরবতাকে উপলব্ধি করা। কথামতো রাতে ফিরে সেদিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনজনই তিনখানা কবিতা লিখে ফেললাম। এই চর্চা লেখালেখিকে সমৃদ্ধ করেছিল নির্দ্বিধায় বলা যায়। আমাদের এইসব আড্ডার বিষয়বস্তু ‘ঘুড়ি’-সম্পাদনার ক্ষেত্রেও প্রভাব রেখেছিল।
পরের বছর দ্বিতীয় সংখ্যায় গল্প, কবিতা, বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ, চিত্রকলা, সংগীত, অনুবাদ সাহিত্য এসব নিয়মিত আয়োজনের সাথে লিটলম্যাগ আলোচনা ও পার্বত্য চট্টগ্রামের লোকশিল্প সংযোজিত হল।

শেষ সংখ্যার প্রচ্ছদটি করে দিয়েছিলেন কবি ও চিত্রকর খালিদ আহসান। তারও আগে মোটামুটি তিন নম্বর সংখ্যা থেকেই খালিদ ভাই যুক্ত ছিলেন ‘ঘুড়ি’র সাথে। কদম মোবারক মার্কেটের নিচে প্রেস গলিতে কোনো এক দুপুর বেলায় বসেছিলেন চালু মেশিনের সামনে। ছাপা চলছিল কিছু। চেরাগি পাহাড় মোড়েই বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান গ্রাফিতির অন্যতম পরিচালক ছিলেন তিনি। আমাকে ওই অঞ্চলে দেখে এটাসেটা অনেক কিছু জানতে চাইলেন। বেশি কিছু বলতেও হল না; প্রচ্ছদ ও লিটল ম্যাগাজিন জগতে আশির দশকের এক উজ্জ্বল নাম খালিদ আহসান। ওই আলাপের পর উনি নিজে গ্রাফিতির বিজ্ঞাপন দিলেন, এবং আশ্বাস দিলেন উনার পরিচিত-মণ্ডলকে এ-বিষয়ে কাজে লাগাবেন। আশ্বাস মনে রেখেছিলেন। বিজ্ঞাপনের পয়সা হয়তো পাওয়া যেত না সবসময়, কিন্তু যে জন্য কৃতজ্ঞ ছিলাম প্রচ্ছদ ও বিজ্ঞাপন মিলিয়ে শেষ চার পাতার দায়িত্ব উনি নিয়ে নিতেন। সে-সমস্ত সংখ্যায় কী যে নিশ্চিন্ত লাগত! একটা প্রচ্ছদে লুসিফার লায়লার একটি চিত্রকর্ম ব্যবহার করলাম। সমালোচনা সাহিত্য সংখ্যায় শিল্পী ইয়াসমিন জাহান নূপুরের একটি চিত্রকর্মও বেশ নজর কেড়েছিল। এই করে করে সকলের যোগে সম্পাদনার মালাটি গাঁথা হত।
‘ঘুড়ি’—এরপর আর প্রকাশিত হয়নি। কারণ হিসেবে বলা যায়, একটা নিভৃত ক্লান্তি ছিল। এছাড়া মনে হল সৃষ্টির মৌলিক-আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। একেকটি সংখ্যার পরিকল্পনা করতে-করতে, একটা ভালো লেখার জন্য তাগাদা দিতে-দিতে, লেখকদের কাছে পৌঁছাতে-পৌঁছাতে, পয়সা জোগাড় করতে-করতে বছর ঘুরে যেত। তবে প্রাপ্তি হল এই, অনেকদিন পর কারো সাথে দেখা হলেই যখন বলে, “ঘুড়ি কি আর বের হবে না?”
এরপর কবিতায় মন দিলাম। কবিতায় যে ইমেজ রচনা করি, সে-ইমেজ ক্যামেরার চোখ দিয়ে দেখতে শুরু করি। আলোকচিত্র আর চলচ্চিত্র জীবনে খুব দখল করে বসল। এরপর সম্পাদনাও শুরু করলাম গত বছর থেকে। এবার অনলাইন মিডিয়ায়। ‘চিত্রসূত্র’ নামে ইমেজ নির্ভর শিল্পপত্রিকা। জড়িয়ে গেলাম আরও অনেক কিছুতে, সবই মনের আনন্দে। পাওয়ার হিসেব সামনে এলেই পথ পিচ্ছিল হয়। বিশাল সমুদ্রের জলরাশি যেমন সুন্দর, বাড়ির কাছের জলাশয়ও সুন্দর। দুটোতেই জল আছে, মিলিয়ে দিতে হয়। মেলবন্ধনের, মালা গাঁথার কাজটাই সম্পাদকরা করেন। সম্পাদনার টেবিলে শেষ লেখাটি পৌঁছে না-যাওয়ার আগ-মুহূর্তের লোমহর্ষক সময়টিই হয়তো তীব্র বেঁচে থাকা।
– সৈকত মুখার্জি সম্পাদিত, হরপ্পা, সপ্তম বর্ষ প্রথম সংখ্যায় মুদ্রিত (অক্টোবর ২০২৩)


No comment